পুরস্কার ফেলে মনু মিয়ার জানাজায় গেলেন অভিনেতা খাইরুল বাশার



কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের গোরখোদক মনু মিয়া আর নেই।

শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়িতেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা খাইরুল বাশার। ঢাকায় একটি বড় অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে সেরা নাট্য অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার গ্রহণের কথা থাকলেও, তিনি তা বাতিল করে ছুটে যান মনু মিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ও দাফন কাজে সহযোগিতা করতে।


দাফন সম্পন্ন করার পর মনু মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন খাইরুল বাশার। তিনি তার পাশে থাকার আশ্বাস দেন এবং যেকোনো প্রয়োজনে ফোন করার অনুরোধও করেন।


ফেসবুকে এক আবেগঘন পোস্টে অভিনেতা লেখেন:

“মনু কাকা আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি কিছুদিন আগেই ঢাকায় চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরেন। বলেছিলেন—আগের চেয়ে ভালো আছেন। তার একটাই চাওয়া ছিল, সুস্থভাবে নিজ গ্রামেই যেন শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন। হয়তো আল্লাহ তাঁর সেই চাওয়া পূরণ করেছেন। মনু কাকার মহৎ জীবনের প্রতিদান আল্লাহ নিশ্চয়ই তাকে জান্নাতের সেরা স্থান দিয়ে দেবেন। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।”


গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে খাইরুল বাশার বলেন,

“মনু চাচা ছিলেন অদ্ভুত এক মানুষ—নিষ্ঠাবান, পরোপকারী ও পরিশ্রমী। আমি যখন হাসপাতালে গিয়েছিলাম, তখন তাকে ঘোড়া কিনে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি বলেছিলেন, ঘোড়া কিনতে হলে তিনি ৫-৭টা একসাথে কিনবেন! চিকিৎসা শেষে তিনি আমাকে বাড়িতে আসার অনুরোধ করেছিলেন। যেতে না পারায় খুবই খারাপ লাগছে।”


জীবদ্দশায় মনু মিয়া প্রায় সাড়ে তিন হাজার কবর খনন করেছেন। একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াতে তার প্রিয় বাহন ছিল ঘোড়া। কিন্তু হাসপাতালে থাকার সময় এক রহস্যজনক ঘটনায় দুর্বৃত্তরা তার সেই ঘোড়াটিকে হত্যা করে।


মনু মিয়ার মতো নিবেদিতপ্রাণ মানুষের অবদান সমাজে অনন্য। তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও দোয়া—আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। আমিন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন