জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সময় সংবাদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে নির্বাচন আয়োজন করলে দেশে আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটতে পারে।
প্রায় এক দশক পর দলীয় প্রতীক ও নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত জামায়াতের নেতাকর্মীরা রাজনীতির মাঠে নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বলেও জানান তিনি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজনীতির মূলধারায় ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে জামায়াতে ইসলামী। দলটির বহু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার, মামলা ও নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়। দল হারায় নিবন্ধন ও প্রতীক। এমনকি ‘জুলাই বিপ্লব’-এর সময়েও জামায়াতকে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হয়।
তবে দীর্ঘ আইনি লড়াই ও নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে জামায়াত এখন ফিরে পেয়েছে তাদের দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ এবং রাজনৈতিক নিবন্ধন। এই প্রেক্ষাপটে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দলটির অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন,
“রাষ্ট্রের যে কাঠামো তৈরি করা হয়েছে, তাতে যেই সরকারই আসুক, সে-ই স্বৈরাচার হবে—যদি কাঠামোর সংস্কার না হয়। সব সংস্কার একসঙ্গে সম্ভব নয়, তবে মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে রাজনৈতিক পরিবর্তনের কোনো মূল্য থাকবে না। সেক্ষেত্রে আবারও স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের আশঙ্কা তৈরি হবে।”
এছাড়া সম্প্রতি লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন।
“এই বৈঠকের পর নিরপেক্ষ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কতটা নিরপেক্ষ থাকবেন—তা নিয়ে আমরা শতভাগ নিশ্চিত হতে পারছি না। জুলাই বিপ্লবের চেতনায় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বপ্ন আদৌ পূরণ হবে কিনা, তা নিয়েও আমাদের আশঙ্কা রয়েছে,” — বলেন তিনি।
দলটির পক্ষ থেকে আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবি তোলা হলেও এখন জাতীয় নির্বাচনকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে সংসদের ৩০০টি আসনের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রার্থী মনোনয়ন সম্পন্ন করেছে জামায়াতে ইসলামী।
