জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের হামলায় একাধিক পারমাণবিক স্থাপনায় ক্ষতি হলেও ইরান সম্ভবত ‘কয়েক মাসের মধ্যেই’ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন পুনরায় শুরু করতে সক্ষম হবে।
শুক্রবার (২৭ জুন) সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেন, “আমি মনে করি, কয়েক মাসের মধ্যেই ইরান সেন্ট্রিফিউজ চালু করে আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে, এমনকি তার চেয়েও আগে।”
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি স্বীকার করেছেন, সাম্প্রতিক হামলাগুলোর কারণে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ‘গুরুতর’ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। অন্যদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, এসব হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কয়েক ‘দশক’ পিছিয়ে গেছে।
তবে আইএইএর প্রধান গ্রোসি ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিনি জানান, ইরানের কিছু পরিকাঠামো এখনও অক্ষত রয়েছে এবং দেশটির সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি।
গ্রোসি আরও বলেন, “হামলার আগে ইরান আনুমানিক ৪০৮.৬ কেজি (প্রায় ৯০০ পাউন্ড) উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছিল, যা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করা হয়েছিল। এই ইউরেনিয়াম যদি আরও পরিশোধিত হয়, তাহলে তা নয়টির বেশি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য যথেষ্ট।”
তবে এই ইউরেনিয়ামের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত নয় আইএইএ। গ্রোসি বলেন, “আমরা জানি না এগুলো কোথায় রয়েছে। হামলায় কিছু ধ্বংস হতে পারে, আবার সেগুলো সরিয়েও নেওয়া হতে পারে। তাই এই বিষয়ে একটি পরিষ্কার ব্যাখা প্রয়োজন।”
এদিকে, ইরানের সংসদ আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ফলে সংস্থাটির তেহরান ও গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো—বিশেষ করে ফোরদো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে পরিদর্শনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
গ্রোসি বলেন, “আমরা সঠিক তথ্য পেতে চাই। কোথায়, কী আছে এবং কী ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমাদের পর্যবেক্ষণের সুযোগ প্রয়োজন।”
